সরকার বদল, নাম বদল—তবুও ‘বঙ্গমাতা’ নামের খাতায় চলছে পরীক্ষা
অপচয় রোধ বলছে প্রশাসন
মো. মিরাজুল ইসলাম, জাবিপ্রবি: চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি সরকারি গেজেট জারির মাধ্যমে নাম পরিবর্তনের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি) এখনও পূর্বের নাম ও প্রতীকে পরীক্ষার খাতা ব্যবহৃত হচ্ছে।
আইন ও গেজেট উপেক্ষা করে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামেই পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা ।
রবিবার (১৩ জুলাই) ব্যবস্থাপনা বিভাগের মিড-ট্রাম পরীক্ষার খাতায় দেখা গেছেপুরোনো নামই । জামালপুর নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে আসা খাতার ছবিতে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে এবং পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, “পূর্বের নামে ছাপানো বেশ কিছু খাতা এখনও মজুদ রয়েছে। সেগুলো নষ্ট না করে অপচয় রোধেই ব্যবহার করা হচ্ছে।”
তবে প্রশাসনের এই ‘অপচয় রোধের’ যুক্তি মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা। নাম পরিবর্তনের মতো একটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এমন দীর্ঘসূত্রিতাকে তারা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত যখন সরকারিভাবে চূড়ান্ত হয়েছে, তখন তা বাস্তবায়নের সম্পূর্ণ দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। অথচ আমরা এমন একটি নামের অধীনে পরীক্ষা দিচ্ছি, যার এখন আর রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো অস্তিত্বই নেই। এটা কি আইনসঙ্গত?”
শিক্ষার্থী ও সচেতনমহলের অভিযোগ, এটি নাম পরিবর্তনকে অগ্রাহ্য করার একটি কৌশল, যার মাধ্যমে আবারও পুরনো নাম প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সচল রাখা হচ্ছে।
কারন হিসাবে তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত, তাই এখানকার অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আওয়ামী লীগপন্থী। এদের অনেকেই সরাসরি আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের পদধারী নেতা। এছাড়াও রয়েছে আওয়ামী-লীগের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের আত্মীয়রাও। ফলে তারা বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না।
বিষয়টিকে মূলত প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবকেই দায়ী করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে আইন ও সরকারি গেজেটকে অবজ্ঞা করার মতো গুরুতর নজির তৈরি হচ্ছে।