দেওয়ানগঞ্জে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ
মহসিন রেজা রুমেল, দেওয়ানগঞ্জ: ঋতু পরিবর্তন এবং হঠাৎ প্রচন্ড গরম-ঠান্ডার কারণে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন গড়ে অন্তত চার থেকে পাঁচশত রোগী জ্বরের চিকিৎসার জন্য আসছেন। এ রোগে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম হলেও আক্রান্তের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে। উপজেলার প্রায় অধিকাংশ পরিবারে এ রোগের রোগী দেখা যাচ্ছে। জুলাইয়ের শুরু থেকে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আগষ্টের শেষের দিকে এ জ্বরের প্রকোপ কমবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।
চিকিৎসকেরা জানান- এ জ্বর ভাইরাস জনিত রোগ। এ জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথমে ঠান্ডা, কাশি হবে। পরে মাথা, চোখ ও শরীরে ব্যথা অনুভূত হবে, শরীর দুর্বল হবে। এ জ্বর ছোঁয়াচে। এক পরিবারে একজন আক্রান্ত হলে খুব দ্রুত ওই পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এ জ্বর সাধারণত চার থেকে পাঁচ দিন স্থায়ী হয়। বাতাস ও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ খুব দ্রুত ছড়ায়। জ্বর নামলেও অন্তত দুই সপ্তাহ আক্রান্ত রোগীর শরীরে দুর্বলতা থাকতে পারে। এ সময় ভিটামিন সিসহ ফলমুল ও তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা যায়- দেওয়ানগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ছাড়াও ২টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। তার মধ্যে উপজেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন বহিরাগত অন্তত ১৫০ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ রোগী এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে খুব কম সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়। ৯০ শতক রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। শিশু ও বয়স্করা এ জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
চুনিয়াপাড়ার মুরাদ জানান- হঠাৎ করে অতিরিক্ত গরমে প্রথমে হাঁচি হয়। পরে জ্বর শুরু হয়। জ্বরের সাথে মাথা ও শরীরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। তিন দিন পর শুধু প্যারাসিটামল খেয়ে তার জ্বর নেমে যায়। কিন্তু তার পরিবারে আরো তিনজন এ জ্বরে আক্রান্ত হোন। তিন দিন পার হয়ে গেছে। তারা এখনও সেড়ে ওঠেনি।
কলিকাপুরের সোলাইমান বলেন-‘হঠাৎ প্রচন্ড গরমে গত রবিবার থেকে তার শরীরে জ্বর ওঠে। এ জ্বর থেমে থেমে ওঠে। শরীর দুর্বল করে। এখনও সে ডাক্তার দেখাননি। বাজার থেকে প্যারাসিটামল কিনে খাচ্ছেন।’
পাথরেরচরের আব্দুল জব্বার বলেন-‘আমার বাড়িতে প্রথমে আমার স্ত্রীর এ জ্বর হয়। পরে একে একে পরিবারের সবার এ জ্বর হয়। ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়ার পাঁচ ছয় দিন পর আমাদের সবার জ্বর সেড়ে গেছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আহসান হাবীব বলেন, এ অঞ্চলে ভাইরাস জনিত জ্বরের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন অন্তত ১৫০ জন জ্বরের রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। আমাদের কাছে আসা রোগীদের আমরা প্রোপার ট্রিটমেন্ট দিচ্ছি এবং সরবরাহ থাকলে ওষুধ সাপোর্ট দিচ্ছি।