ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল গনির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ
শাওন মোল্লা,জামালপুর: জামালপুর পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গনির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় জামালপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হায়দারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সৈয়দ তানভীর হাবিব (শাওন) নামে এক ব্যক্তি।
সৈয়দ তানভীর হাবিব (শাওন) জামালপুর শহরের পশ্চিম কাচারী পাড়া এলাকার মৃত সৈয়দ রেজাউর রহমানের সন্তান।
লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করা হয়- জামালপুর শহরের মৃধা পাড়া এলাকার একটি জমির মালিক শাহনাজ খানমের পক্ষে পাওয়ার অফ অ্যার্টনী মূলে মামলা পরিচালনা করে আসছেন তানভীর হাবিব শাওন। সেই জমি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মোকদ্দমা নং- ৩১৮/২০২৫। মামলা দায়েরের পর বিচারক জামালপুর সদর থানা এবং জামালপুর পৌর ভূমি অফিসকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক জামালপুর সদর থানা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। কিন্তু ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গণি কোনো প্রতিবেদন জমা দেননি। প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গনিকে অনুরোধ করলে তিনি জমি দখল করাসহ সকল সমস্যার সমাধান, অফিস পরিচালনা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কথা বলে এক লাখ টাকা দাবি করেন। শাওন ৯০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। পরে তিনি ২৭ নভেম্বর সকাল ৯টায় সরদারপাড়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে গনি’র সহকারী জহুরুলকে ২ হাজার টাকা, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল গনিকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর ২৮ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে জামালপুর পৌর ভূমি অফিসের সামনে আব্দুল গণির কাছে ৫হাজার টাকা দেয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় আরো ৭৮ হাজার টাকা দেয়া হয়। এর মধ্যে কিছু টাকা দেয়ার সময় কথোপকথনের অডিও রেকর্ড রয়েছে তার কাছে। ২৭ নভেম্বর সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে এবং অর্থ নেয়ার পরেও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গনি সেই তদন্তের প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে জমা দেননি।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়- আমেনা আক্তার বাদী হয়ে শাহনাজ খানমকে বিবাদী করে একই আদালতে একই ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন চাইলে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আব্দুল গনি কম সময়ের মধ্যে মনগড়া একটি প্রতিবেদন জমা দেন।
ভুক্তভোগী সৈয়দ তানভীর হাবিব (শাওন) বলেন- ‘এসব বিষয়ে জানতে ১৮ ডিসেম্বর বেলা ১২ টা থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় ভূমি অফিসে গেলে আব্দুল গনি আমার দেয়া অর্থ ফেরত দিতে রাজি হন। এসব কথোপকথনের ভিডিও ভূমি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে রেকর্ড হয়েছে বলে আমি জানি। তার এমন অপেশাদার কর্মকান্ডের জন্য আজ আমি খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এছাড়াও তার এমন কর্মকান্ড ভূমি অফিসের মান ক্ষুন্ন করে। আমি তার বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জামালপুর পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গনি বলেন-‘আমি ব্যস্ত থাকার কারনে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দিতে পারিনি। পরের মামলাটির সময় হাতে সময় থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আর ঘুষ গ্রহনের যে অভিযোগটি উঠেছে সেই অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
এসব বিষয়ে জামালপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হায়দার বলেন-‘ আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিলে সেই প্রতিবেদন জমা দিতে বাধ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। কেনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হলো না, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।আর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।’




