সাদা না কালো, কোন চিয়া বীজ বেশি পুষ্টিকর?
চিয়া ভেজানো জল বা চিয়াবীজ মেশানো স্মুদিতে চুমুক দিয়ে এখন দিন শুরু হয় অনেকেরই। গত কয়েক বছরে সমাজমাধ্যমে চিয়া বীজের গুণাগুণ নিয়ে এতটাই চর্চা হয়েছে যে, অনেকেই চিরাচরিত প্রাতরাশে বদল ঘটিয়েছেন। স্বাস্থ্যের কথা ভেবে খাচ্ছেন চিয়া ভেজানো জল বা চিয়া মিশ্রিত স্মুদি থেকে অমলেট।
কিন্তু চিয়া বীজ সাদা, কালো দু’রকমই হয়। রঙের ফারাকে কি পুষ্টিগুণেও তফাত হয়? তার আগে জানা দরকার, দু’টি কেন আলাদা?
সাদা চিয়াবীজের রং হয় অফ হোয়াইট বা ক্রিমের মতো। অন্য দিকে, কালো বীজটি কালোর পাশাপাশি ধূসর রঙেরও হয়। জিনগত তফাতের জন্যই রঙের ফারাক হয়, এর সঙ্গে প্রক্রিয়াকরণের কোনও সম্পর্ক নেই।
পুষ্টিগুণে এগিয়ে কে?
ফাইবার, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসে পূর্ণ বীজটির পুষ্টিগুণে খুব সামান্য হেরফের হলেও, বিশেষ কোনও তফাত নেই। ‘মলিকিউলস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে, কালো চিয়া বীজে প্রোটিনের পরিমাণ যেখানে ১৬.৯ শতাংশ, সেখানে সাদা বীজে প্রোটিন মেলে ১৬.৫ শতাংশ। কালো বীজে ফাইবার মেলে ৩২.৬ শতাংশ, সাদা বীজে ৩২.৪ শতাংশ। বায়োলজিক্যাল এবং বায়ো মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সাদা বীজে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ আবার কালো বীজের চেয়ে অনেকটা বেশি।
পুষ্টিগুণে সামান্য হেরফের হলেও, স্বাদে অবশ্য তারা একই রকম। খাওয়া যায় একই পন্থায়। স্মুদি থেকে স্যুপ, পুডিংয়ে যোগ করে।
স্বাস্থ্যকর উপযোগিতা: হজম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক চিয়াবীজ। দুই বীজই একই রকম উপকারী। ডায়াবেটিকদের উপর দুই রকম বীজ কতটা প্রভাব ফেলে জানতে সমীক্ষা চালিয়েছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস’। তাদের গবেষণালব্ধ ফল বলছে, দুই বীজের উপকার কার্যত একই রকম। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হোক বা ওজন কমানো—দুই ধরনের বীজে প্রায় একই মাত্রার ফাইবার থাকায়, দু’টি সমান কাজ করে। শুধু অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণে এগিয়ে সাদা চিয়া বীজ।
বাজারে কালো বীজটি বেশি পাওয়া যায়। সাদা বীজও মিলছে এখন। কোথাও কোথাও এর দাম কালো বীজের চেয়ে বেশি। তবে চিয়া বীজ খাওয়া দরকার পরিমাণমতো, চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে। না হলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে।