টাইব্রেকার ও গোলের নাটক পেরিয়ে ফাইনালে ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিভাগ
মোঃ মিরাজুল ইসলাম,জাবিপ্রবি: জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি) ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর স্মরণে আয়োজিত ‘জুলাই স্মৃতি ২০২৪ আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট’ চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছে।
আগামী ৩০ জুলাই জমজমাট এই আসরের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে শিরোপার জন্য লড়বে ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিভাগ।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি বিভাগের অংশগ্রহণে গত ১৫ জুলাই এই টুর্নামেন্টের পর্দা ওঠে। উদ্বোধনী ম্যাচে ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের খেলার মাধ্যমে যে উত্তেজনার শুরু হয়েছিল, তা প্রতিটি ম্যাচেই নতুন মাত্রা পেয়েছে। ২৩ জুলাই গ্রুপ পর্বের খেলা শেষে সেমিফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে গ্রুপ ‘এ’ থেকে ব্যবস্থাপনা ও গণিত এবং গ্রুপ ‘বি’ থেকে সমাজকর্ম ও ফিশারিজ বিভাগ।
ফাইনালের টিকিট পেতে দুটি সেমিফাইনালই ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। গত ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে ব্যবস্থাপনা ও ফিশারিজ বিভাগের লড়াই নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়েও গোলশূন্য ড্র থাকে। অবশেষে টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষায় ৫-৪ গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
অন্যদিকে, ২৮ জুলাইয়ের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে গণিত বিভাগ মুখোমুখি হয় সমাজকর্ম বিভাগের। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা। ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেন গণিত বিভাগের খেলোয়াড় জাকির হোসেন। তার এই গোলেই ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফাইনালে পা রাখে গণিত বিভাগ।
প্রসঙ্গত এই সেমিফাইনাল ম্যাচে একটি ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। গণিত ও সমাজকর্ম উভয় বিভাগের জার্সির রঙ লাল হওয়ায় দেখা দেয় জটিলতা । পূর্বে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টসে হেরে যাওয়া দলকে বিকল্প জার্সি পরতে হবে। সেই অনুযায়ী টসে হেরে যাওয়ায় সমাজকর্ম বিভাগকে ক্রীড়া দপ্তরের পক্ষ থেকে সবুজ রঙের জার্সি প্রদান করা হয় এবং তারা সেই জার্সি পরেই খেলায় অংশগ্রহণ করে।
টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পাসেই বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। মাঠের সবুজ ঘাস থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওয়াল-সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই ফুটবল টুর্নামেন্ট। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং ক্রীড়াসুলভ মনোভাব ক্যাম্পাসে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, যা ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের এক দারুণ উদাহরণ স্থাপন করেছে।
এবারের আয়োজন নিয়ে জাবিপ্রবির ক্রীড়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. সৈয়দ নাজমুল হুদা বলেন- “সাতটি বিভাগের অংশগ্রহণে প্রতিটি খেলা অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এমন অংশগ্রহণ ও ক্রীড়া চেতনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক। আমরা আশা করি, ফাইনাল ম্যাচেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা আমরা উপভোগ করতে পারব।”
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচকে ঘিরে এরই মধ্যে খেলোয়াড়, দর্শক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকলের প্রত্যাশা, ৩০ জুলাইয়ের ফাইনাল ম্যাচটি হবে এক স্মরণীয় ও উত্তেজনাপূর্ণ মহারণ, যা ‘জুলাই স্মৃতি’কে মহিমান্বিত করবে।