সারাদেশ

ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর: টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে সদর বাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে নদীর তীরবর্তী অন্তত পাঁচটি ঘর । এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন নদীর পাড়ের হতদরিদ্র মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান- দুপুর থেকে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ও উপজেলা সদর বাজারে পানি ঢুকে পড়ে। এ সময় উপজেলার পূর্ব খৈলকুড়া গ্রামের সাত্তার মিয়া, বারেক মিয়া, বাচ্চু মিয়া, রহিম মিয়া, আমিনুলের বাড়িসহ পাঁচটি বাড়ি ভেঙে চলে যায়। এ ছাড়া সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে ধানশাইল ইউনিয়নের কাড়াগাঁও-ধানশাইল সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পূর্ব খৈলকুড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বারেক মিয়া বলেন-‘আমি হতদরিদ্র মানুষ, কাজ করে খাই। প্রতিবছরই পাহাড়ি ঢলে এমন কইরা বাড়িঘর ভাসায়া নিয়া যায়। কোনো রকমে খাটটা আর শোকেসটা বের করছি। আর কিছুই বের করতে পারি নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডরে বাঁধের কথা বললে তারা বলে বাজেট নাই। এই যে ক্ষতি হইল আমার, এটার ক্ষতিপূরণ কে দিব?’

মনুয়ারা বেগম বলেন-‘কোনো রকমে কাপড় আর কিছু জিনিস বের করতে পারছি। এর মধ্যেই ঢলের পানি সব ভাসায়া নিয়া গেছে। এখন আমি কী করমু? কেমনে চলমু?’

এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে-জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯৯ শতাংশ ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলায় রোপা আমন আবাদের নিম্নাঞ্চলের কিছু ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন জানান- পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার ১১৩ হেক্টর রোপা আমন আবাদ পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর সম্পূর্ণ ও ৬৩ হেক্টর আংশিক। তবে পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে নেমে গেলে আবাদের তেমন ক্ষতি হবে না।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল জানান- ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button