জামালপুর

 ৮২ দিন পর ঢাকা থেকে উদ্ধার হলো জামালপুরের তাওহীদ

হৃদয় আহম্মেদ, জামালপুর: নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ ৮২ দিন পর অবশেষে পরিবারের কোলে ফিরে এসেছে জামালপুরের কিশোর আব্দুল তাওহীদ।

পরিবার থেকে জানা যায়- গত ২৮ জুন শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় লাঙ্গল জোড়া নূরানী মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় তাওহীদ। কিন্তু রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসার মুহতামি তার বাবা রুবেল মিয়াকে ফোন করে জানান, তাওহীদ মাদ্রাসায় পৌঁছায়নি। এরপর থেকেই শুরু হয় সন্তানের খোঁজাখুঁজি। সারারাত খুঁজেও কোনো সন্ধান না পেয়ে পরদিন ২৯ জুন জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ১৭৯৫) করেন তাওহীদের বাবা।

জিডি করার পর থেকেই ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন এসআই খায়রুজ্জামান। তিনি নিজ উদ্যোগে নিখোঁজ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করান এবং তাওহীদের ব্যবহৃত বাটন ফোন ট্র্যাক করে সরিষাবাড়ি পর্যন্ত অনুসন্ধান চালান। তবে প্রথম পর্যায়ে তাকে উদ্ধার সম্ভব হয়নি। পরে এসআই খায়রুজ্জামানের পরামর্শে তাওহীদের বাবা লিফলেট ছাপিয়ে বাস, ট্রেন, সিএনজি ও জনবহুল স্থানে বিতরণ করেন। অবশেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক স্থান থেকে খবর পেয়ে তাওহীদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উদ্ধারের পর তাওহীদ জানায়- বাড়ি থেকে বের হয়ে রেলস্টেশনে গিয়ে ঘড়ি কিনি। সেখানেই দুইজন লোক আমার মুখে স্প্রে দেয়। এরপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি ঢাকায়। তারা খুনের হুমকি দিয়ে সারাদিন কাজ করাতো, খাবারও ঠিকমতো দিত না। আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে।

তাওহীদের বাবা মোঃ রুবেল আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন- আমরা ভেবেছিলাম হয়তো আর কোনোদিন ছেলেকে দেখতে পাব না। আল্লাহর রহমতে আর এসআই খায়রুজ্জামানের অক্লান্ত চেষ্টার কারণে আজ আমার ছেলে ফিরে এসেছে। তার প্রচেষ্টা না থাকলে হয়তো এ উদ্ধার সম্ভব হতো না।

এ প্রসঙ্গে এসআই খায়রুজ্জামান বলেন- তাওহীদ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার, লিফলেট বিতরণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবশেষে পরিবারকে সন্তান ফিরিয়ে দিতে পেরে স্বস্তি পেয়েছি। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে, জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পুরো ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Related Articles

Back to top button