মেলান্দহ জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় ১ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ৫
সাকিব আল হাসান নাহিদ, মেলান্দহ: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত জিয়াউল হক (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত ১টা দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) জুমার নামাজের পর মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের উত্তর জাঙ্গালিয়া এলাকায় জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় জিয়াউল হকসহ একই পরিবারের ৮ জন গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাগিনা সবুজ হোসেন বাদী হয়ে মেলান্দহ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সাজু মিয়াসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সাজু মিয়া (৪০), সুমন (২৮), আহাজ উদ্দিন (৬৫), রাজু (২৫) ও সাজুর ছেলে নাঈম (২২)। ঘটনার পরেই ঘরবাড়ি তালাবদ্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তরা।
স্থানীয়রা জানান- পারিবারিক ৪ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জিয়াউল হক ও তার চাচাতো বোনের ছেলে মো. সাজু মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন অভিযুক্ত সাজু মিয়া তার লোকজন নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে বাঁশ কাটতে যাওয়ার পর জিয়াউল হক ও তার পরিবার বাধা দিলে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দলবল নিয়ে নিহত জিয়াউলের হকের পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে তারা।
এতে জিয়াউল হক ও তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মনির (১৮), স্ত্রী মরিয়ম (৪০), মেয়ে জান্নাতি (১৭), রুবেল (৩৬), রেহানা বেগম (৩৮), চাম্পা বেগম (৪০) ও শিশু সোহান (১০)গুরুতর আহত হলে তাদের জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে আহত অবস্থায় জিয়াউল হককে প্রথমে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে জামালপুর সদর হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বোন রেহেনা পারভিন বলেন, আমার ভাইয়ের জমি সব কাগজপত্র আমার ভাইয়ের। সে জমি ওরা নিজেদের দাবি করে। এনিয়ে কয়েকবার সালিশি হলেও তারা কোনো সিদ্ধান্ত মানেনি। গতকাল সে জমিতে জোরপূর্বক বাঁশ কাটতে আসে সাজুরা। এতে বাঁধা দিতে গেলে সাজু মিয়া দলবল এনে হামলা করে। আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও মারধর করে। আমার ভাইকে যারা পিটিয়ে মারলো তাদের বিচার চাই। তাদের ফাঁসি চাই।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে তাদের বাড়িতে গেলে কাউকেই পাওয়া যায়নি।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় জিয়াউল হকসহ ৮ জন আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে জিয়াউল হক মারা যান। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”