মাদারগঞ্জে সড়কের খানাখন্দে হাটু পানি, চরম দুর্ভোগে পথচারী
এম আর সাইফুল,মাদারগঞ্জ: সাড়ে ছয় কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। বেশির ভাগ স্থানে পিচঢালাই নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। প্রতিনিয়তই উল্টে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া কাদাপানি ছিটে পাশের দোকানপাট ও পথচারীদের পোশাক নষ্ট হচ্ছে।
এই চিত্র জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী বাজার-জামথল সড়কের। স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক সংস্কারের দাবি জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়কজুড়ে পানি থইথই করছে। কার্পেটিং উঠে ভেঙে গিয় বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একেকটা গর্ত যেনো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যেই চলছে বিভিন্ন যানবাহন। বৃষ্টির পানি জমায় গাড়ি চলছে ধীরে। লোকজন যে আশপাশ দিয়ে হাঁটবেন, তারও কোনো উপায় নেই।
জানা গেছে, মাদারগঞ্জ পৌরসভার চাঁদপুর, চর গাবেরগ্রাম, দক্ষিণ চর বওলা, বালিজুড়ী ইউনিয়নের চরশুভগাছা, কামারিয়ার চর, বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল, চর ঘাগুয়া, টেংড়াকুড়া এলাকাসহ ২০টি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের চলাচলের অবলম্বন এই সড়ক। এছাড়া এই সড়কে মাদারগঞ্জ এ.এইচ.জেড সরকারি কলেজ, বালিজুড়ী এফ.এম উচ্চ বিদ্যালয়, নুরন্নহার মির্জা কাশেম মহিলা কলেজ, বালিজুড়ী এস.এম ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসা, মাদারগঞ্জ আব্দুল আলী মির্জা কাশেম কামিল মাদরাসাসহ প্রায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী চলাচল করে। সড়কটিতে খানাখন্দে ভরা থাকায় ইতোমধ্যে অনেক যানবাহন চলাচল কমে গেছে। ফলে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
জহুরুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন- ‘আর ছবি তুলে কোনো লাভ নেই। অনেকেই শুধু শুধু ছবি তুলে নিয়ে যান। রাস্তা মেরামতের কোনো কাজ হয় না। এই অবস্থা কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। কিছু ইটের আদলা (ভাঙা ইট) ফেলে রাখলেও তো চলাচল করা যেত।’
শুভগাছা গ্রামের বাসিন্দা তোফাজ্জল তালুকদার বলেন- ‘বালিজুড়ী বাজার-জামথল সড়কের বেহাল অবস্থা। দ্রুত সংস্কার করা হলে জনসাধারণ অনেক উপকৃত হবে।’
চাঁদপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন-‘বালিজুড়ী বাজার-জামথল সড়কটি এতই খারাপ যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে রোগী কিংবা গর্ভবতী নারীদের উপজেলা বা জেলা সদরে নিতে হলে ৫-৬ কিলোমিটার সড়ক পুরোটাই খানাখন্দ এই সড়ক দিয়েই ঝুকি নিয়ে যেতে হয়। আবার বৃষ্টি হলে বড় বড় গর্তে পানি জমে সড়ক দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।’
এসব বিষয়ে জামালপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওয়াজিস রহমান বিশ্বাস বলেন- ‘বালিজুড়ী বাজার-জামথল সড়কটি বর্তমানে ১২ ফুট প্রশস্ত আছে সেটা বাড়িয়ে ১৮ ফিট করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শন করে গেছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। তবে আপাতত সড়কের গর্তগুলোতে দ্রুত কিছু খোয়া ও বালু ফেলা হবে। আর মাঝেমধ্যেই গর্তগুলোতে খোয়া-বালু দেওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পানি জমে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে এমন অবস্থা হয়েছে।’