জাতীয়সারাদেশ

বেনাপোলে নষ্ট করোনা পরীক্ষার মেশিন

স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ট্রাকচালকরা

করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার সব স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরে সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত বেনাপোলে কোনো ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে শর্ট সার্কিটের কারণে এক বছর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ডিজিটাল থার্মাল মেশিনটি।

এর ধারাবাহিকতায় বেনাপোল ইমিগ্রেশন এলাকাতেও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরা। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীসহ ইমিগ্রেশন পুলিশ, বন্দর ও কাস্টমসে কর্মরত অনেকে এ নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

এদিকে পাসপোর্টধারীরা মাস্ক ছাড়াই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণ করছেন। নিরাপত্তাকর্মী থেকে শুরু করে বন্দর ব্যবহারকারী শ্রমিকদের মধ্যেও কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। এতে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে সচেতন মানুষের মধ্যে।

বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের অবাধ বাণিজ্য ও পাসপোর্টধারী যাতায়াত। সম্প্রতি ভারতে করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ বাড়লে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে গত ১১ জুন এক প্রজ্ঞাপনে দেশের সব স্থলবন্দর, নৌবন্দর ও বিমান বন্দরে সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ নির্দেশনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়নি দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম এ বেনাপোল বন্দরে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ শতাধিক ট্রাক চালকেরা মাস্ক ছাড়াই প্রবেশ করছে দেশে। বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরাও অবাধে ঢুকছে বন্দরে। বন্দর পণ্য খালাসি শ্রমিকদের মধ্যেও কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নজরে পড়েনি। গতবার দেশে সংক্রমণ বাড়লে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় টানা তিন মাস এ পথে বন্ধ ছিল বাণিজ্য।

এদিকে ভারত থেকে পাসপোর্টধারীরা মাস্ক ছাড়া ঢুকলেও নজর নেই স্বাস্থ্যকর্মীদের। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেককে মাস্ক পরতে দেখা যায়। হাত ধোয়ার বেসিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে চার বছর। নেই পানি বা সাবানের ব্যবস্থা।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক আনু জানান, গতবার করোনা বাড়লে তিন মাস বাণিজ্য বন্ধে অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগাম সতর্কতা না নিলে আবারও আগের মতো অবস্থার মধ্যে পড়তে হতে পারে। বেনাপোল বন্দরে করোনা থেকে সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বন্দরকে অনুরোধ জানাই।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী জানান, করোনা সতর্কতায় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। ইমিগ্রেশনের সবাইকে মাস্ক পরিধান ও যাত্রীদের সচেতন করা হচ্ছে। কোনো আক্রান্ত যাত্রী এখনো ধরা পড়েনি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ নতুন ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। দেশের অভ্যন্তরেও করোনা দেখা দিয়েছে। ভারতফেরত যাত্রীদের করোনার লক্ষণ রয়েছে কিনা শরীরের তাপমাত্রা হ্যান্ড থার্মাল দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে অনেকে সুরক্ষা মানতে অনীহা প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, শর্ট সার্কিটের কারণে ডিজিটাল থার্মাল মেশিনটি এক বছর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মো. শামিম হোসেন জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে তারা মাস্ক পরার নির্দেশ দিয়েছেন। খুব দ্রুত বন্দরে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Back to top button