সরিষাবাড়ী

শুয়াকৈর ব্রিজ ভাঙ্গনের ৫ বছরেও হচ্ছে না সংস্কার, চরম দুর্ভোগে মানুষ

স্বপন মাহমুদ, সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি: প্রায় ৫ বছর ধরে ঝিনাই নদীর উপর দাড়িয়ে আছে বন্যায় ভেঙে যাওয়া গার্ডার ব্রিজ। র্দীঘ দিন অতিবাহিত হলেও সেতুটি র্নিমানের নেই কোন উদ্দ্যোগ সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের। ব্রিজটি নির্মান বা সংস্কারের উদ্দ্যোগ না থাকায় হতাশায় পড়েছেনে চরাঞ্চলের অর্ধশত গ্রামের হাজারোও মানুষ। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সংযুক্ত রাস্তা শুয়াকৈর ঝিনাই নদীর ব্রিজ। এলাকার জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তি শিকারে চরাঞ্চলের মানুষ।

সরিষাবাড়ী উপজেলা কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের মধ্যে বয়ে যাওয়া ঝিনাই নদীতে ব্রিজটি অবস্থিত। গত ২০২০ সালে ২২ জুলাই বন্যায় পানির তোড়ে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য গার্ডার ব্রীজের মাঝখানে ৪টি পিলার ও তিনটি স্প্যানসহ ৬০ মিটার নদীর পেটে বিলীন হয়ে য়ায়। এর পর থেকে নদী পারাপারে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষ। শুয়াকৈর গ্রামের মধ্যে প্রবাহিত ঝিনাই নদীর উপর সেতুটি ছিল চরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু। গত ১৯টি বছর ওই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। কৃষক তার জমির ফলানো ফসল নিয়ে হাট-বাজারে, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা, চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ীরা, জরুরী চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন সুবিধা সহজেই ভোগ করেছেন। হঠাৎ সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। ব্রিজটি পূঃণনির্মান বা সংস্কার হলে মানুষের দুর্ভোগ লাগব হবে।

সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নে ২০০৩-০৪ অর্থ বছরের এলজিইডি অর্থায়নে প্রায় দুই কোটি টাকায় সেতু নির্মানে কার্যাদেশ পেয়ে এম এইচ এন্টারপ্রাইজ এর স্বতাধিকার আক্তারুজ্জামান সেতুটি নির্মান করেন। শুয়াকৈর গ্রাম এলাকার ঝিনাই নদীর ওপর ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজটি নির্মান করে এলজিইডি। এ ব্রীজটি নির্মান কাজ শেষ হয় ২০০৬ সালে। নির্মানের প্রায় ১৯ বছর পর হঠাৎ ২০২০ সালে ২২ জুলাই বন্যায় পানির তোড়ে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য গার্ডার ব্রীজের মাঝখানে ৪টি পিলার ও তিনটি স্প্যানসহ ৬০ মিটার নদী পেটে বিলীন হয়ে য়ায়। ব্রীজটি নির্মান হওয়ার পর থেকে চরাঞ্চলের অর্ধশত গ্রামের মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াতের সুবিধাসহ কৃষি উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ব্যবহার ছিল দিন-রাত ২৪ ঘন্টা। সেই সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত । সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় কৃষকরা কৃষি পণ্যের ন্যায মুল্য বঞ্চিত হয়ে আসছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে চরাঞ্চলের কৃষকরা।

ব্রীজটি নির্মাণ হওয়ার পর এলাকার হাজার বেকার যুবক ও নিম্ন আয়ের মানুষ অটোরিকশা ও ভ্যান চালিয়ে উর্পাজন করে পরিবারের চাহিদা মেটাতো। এতে এলাকার মানুষের অভাব অনটন অনেকাংশে পূরণ হতো। এ সব যান চলাচলের ফলে চরাঞ্চলের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, মূমূর্ষ রোগিদের যে কোনো সময় চিকিৎসার করার সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থ ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। দরিদ্র অটোরিক্সা, ভ্যানগাড়ী চালানো বন্ধ হয়ে গেছে। ব্রীজটি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় গত প্রায় ৫বছরে নিম্ন আয়ের হাজারো মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। এর সাথে চিকিৎসা সেবাসহ যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষ।

নদীর গর্ভে বিলীন হওয়া ব্রীজটি ঘিরে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। তথ্য সংগ্রহকালে প্রতিবেদককে চরাঞ্চলের যাতায়াতে ভুক্তভুগী, মন্জুরুল ইসলাম, আলী আকবর, সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, হাফিজুর রহমান ও বাছেদ মিয়া জানান, এখন বন্যা চলে এসেছে। বর্ষা মৌসুম আসার আগেই নদীর ওপর ব্রীজ পুণঃনির্মান বা সংস্কার করে ভোগান্তির নিরশন করতে দাবি জানালেও কোন আশার আলো খুজেঁপাইনি তারা। হতাশায় চলছে দিন-মাস-বছর। তাদের সেতুটি র্নিমান বা সংস্কার করলে দুর্ভোগ নাগাত হতো। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সেতুটি র্নিমানের দাবী করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্রীজের পাশে দিয়ে নতুন করে ব্রীজ নির্মান কাজের সকল তথ্য সংশ্লীষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ব্রীজ র্নিমানে সকল প্রস্ততি চলমান রয়েছে। নতুন করে ব্রীজটি র্নিমানে ডিপিপিতে অর্ন্তভোক্ত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

Related Articles

Back to top button