মাদারগঞ্জ-ভাটারা সড়কে খানাখন্দ, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
এম আর সাইফুল, মাদারগঞ্জ: জামালপুরের মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী- ভাটারা সড়কের প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কের পিচ, ইট, পাথর উঠে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে এসব খানাখন্দে। খোয়া বালু দিয়ে সাময়িকভাবে মেরামত করা গর্তগুলো আবারও ফিরে গেছে পুরনো চেহারায়। খানাখন্দে ভরপুর এই সড়ক দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পরিবহন মালিক, স্টাফ, যাত্রী ও উপজেলার বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ দিনেও সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাচলও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বালিজুড়ী-ভাটারা সড়কের ১৮ কিলোমিটারের অধিকাংশই বড়বড় খানাখন্দে ভরা। সড়কের চারটি
এলাকায় বাজার গড়ে উঠেছে। এসব বাজার মূল সড়কের চেয়ে এক দেড় ফুট উঁচু। ওইসব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি এলেই পানি জমে সড়কের ওপর। এ ছাড়াও সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে হাজারও ঘড়বাড়ি। এসব বাড়ি থেকে পানি এসেও জমছে মূল সড়কে। এতে সড়কের পিচ খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় গর্তের। পিচ ঢালাই উঠে যাওয়ায় এবং গর্তগুলো বড় হওয়ায় বৃষ্টির পানি আটকে বড় ধরনের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
ট্রাকচালক শামিম জানান, দীর্ঘদিন যাবত এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও সংস্কারের কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে চালকরা সবসময় ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি চালিয়ে আসছেন। বৃষ্টির সময় গর্তগুলো বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকে। এতে করে গাড়ি উল্টে অনেক দুর্ঘটনা ঘটলেও সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবিও জানান তিনি।
সিধুলি ইউনিয়নের হাটবাড়ি গ্রামের ভ্যানচালক সামিউল ইসলাম জানান-‘প্রতিদিন তাদের ওই সড়ক দিয়ে
যাতায়াত করতে হচ্ছে। সড়কের অধিকাংশই খানাখন্দ থাকার কারণে যাত্রী ও ভারী মালামাল তার সঙ্গে নিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান চালাতে হচ্ছে।’
আদার ভিটার ইউনিয়নের মোকছেদ, মোজাম্মেল, করিম ও গুনারীতলা ইউনিয়নের লুলু মিয়া, বুলবুল মিয়াসহ বেশ কয়েকজন জানান- সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় শতশত খানাখন্দের। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বাসসহ ভারী মালামালবাহী যানবাহন চলে হেলেদুলে। ছোটবড় গর্ত দিয়ে ভারী যানবাহন চলতে গিয়ে
গর্তে পড়ে প্রায় বিকল হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি আরো বেহাল হয়ে পড়ে। খানাখন্দে ভরা রাস্তা কাদা-পানিতে ভরে যায়। চলাচল করতে গিয়ে জামাকাপড়ের সাথে সাথে বই-পুস্তকও নষ্ট হয়ে যায়।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওমর ফারুক জানান, এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি এলে তো চলাই যায়না। বৃষ্টির পানিতে ভর্তি হয়ে যাওয়া এই গর্তগুলোর গভীরতা গাড়ির চালকরা বুঝতে পারছেন না। চাকা গর্তে পড়ে বাস, ট্রাক, নসিমন, ভটভটি ও কালভার্ট ভ্যান কাত হয়ে যায় এবং অনেক সময় উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম কিবরিয়া তমাল জামালপুর নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকমকে জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য এলজিইডির সদর দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। অনুমোদনের পরেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।