সেতুর অভাবে ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ
মহসিন রেজা রুমেল,দেওয়ানগঞ্জ: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে জিঞ্জিরাম নদের ওপর সেতু না থাকায় ১৬ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ হচ্ছে। শিক্ষা, চিকিৎসাসহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে গ্রামগুলো। নদীর ওই স্থানে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জিঞ্জিরাম নদটি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মৌলভীরচর, খােলাবাড়ী, বয়রাপাড়া, পশ্চিম লংকারচর, টুবগারচর ও ফুলছড়ি উপজেলার জিগাবাড়ী, ডাকাতিয়া, ভাটিয়াপাড়া, আনন্দবাড়ী, চরচমহন, গোপীনাথ, কিশামতধলী, উনত্রিশপাড়া, উত্তর হরিচন্ডি, সন্ন্যাসীরচর, তালপট্টি গ্রামের পূর্ব দিক দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়। বর্ষাকালে নদটি ভরে গেলেও শুকনো মৌসুমে পানি কমে নদীতে চর জেগে ওঠে। এ সময় বালুর মধ্যে চলাচল করতে আরও বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়-জিঞ্জিরাম নদের হাতিভাঙা-কাঠারবিল ঘাটে নৌকা দিয়ে পার করা হচ্ছে যাত্রী ও মালপত্র। নৌকা পার হতে ঘাটের ইজারাদারকে জনপ্রতি ১০ টাকা, মোটরসাইকেল ২০ টাকা ও অটোভ্যান প্রতি ৬০ টাকা করে দিতে হয়। দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে মালামাল বোঝাই অটোভ্যান। নৌকায় ভ্যান তুললে যাত্রী ও মোটরসাইকেল পার হওয়া মুসকিল হয়ে পরে। আগে পার হওয়া নিয়ে মাঝেমধ্যেই বাকবিতন্ডা হয় ভ্যানচালক ও যাত্রীদের মাঝে।
পশ্চিম লংকারচরের আব্দুল গণি বলেন- ‘গ্রামগুলোতে ভালো হাটবাজার নেই। তাই এই অঞ্চলের কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নদের অপর পারের হাটবাজারে যেতে হয়। পারাপারে সেতু ও সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।’
স্থানীয় শিক্ষক ফয়জুর রহমান জানান- বর্ষাকালে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ খেয়া নৌকা পার হয়ে পূর্ব পাড়ে যাতায়াত করে। শুকনো মৌসুমে নদীর বুকে বালু জমে চর জাগে, তখন মানুষজন ও পণ্যসামগ্রী পারাপারে আরও অধিক দুর্ভোগ হয়। নদীর ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি তাঁর।
উপজেলার চরআমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম বলেন-‘জিঞ্জিরাম নদের পশ্চিম পাড়ের ১৬টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষকে প্রতিদিন নানা কাজে পূর্ব পাড়ে আসতে হয়। নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে দুর্ভোগ লাঘব হবে এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের।’
এলজিইডির দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীন জানান- জিঞ্জিরাম নদের উপর সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। আশা করছি যাচাই-বাছাই করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকল্পটি অনুমোদন হবে।অনুমোদন হলে সেখানে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।