জামালপুরপ্রধান খবর

কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আওয়ামী লীগের আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি আব্দুর রশিদ। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তার কাছ থেকে। জামালপুর শহরের সরদার পাড়ার ৭৬.৮১ শতাংশ জমি বিক্রির নামে স্ট্যাম্পে বায়নাপত্র দেখিয়ে এই প্রতারনা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এমন অভিযোগ করেছেন এজি মেলকো এলিভেটর কোম্পানির কর্মকর্তা এস এম এম রহমান বিপ্লব।

ওই বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে দিয়ে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নামা শ্রেণী নালা নর্দমাময় জায়গাটি মাটি ভরাট, দেয়াল নির্মান ও চলাচলের রাস্তা করে জায়গাটি উন্নয়ন করে জমিটি অন্যত্র বেশী দামে বিক্রি করার পাঁয়তারা করছেন আব্দুর রশিদ।

আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে মির্জা আজম ও তার ভাতিজি জামাই শেখ হাসিনার আস্থাভাজন বরখাস্ত সাবেক শিল্প পুলিশ প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপনের দাপট দেখিয়ে সাব কবলা ও জায়গা বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো হুমকী ধামকী ও ডজন খানেক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন বিপ্লব।

অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ জুলাই বিপ্লবে উত্তরা পূর্ব ও আশকোনা থানায় ছাত্র জনতা হত্যা মামলার আসামী। গ্রেফতার এড়াতে আত্বগোপনে আছেন আব্দুর রশিদ।

ভুক্তভোগি এ এস এম রহমান বলেন- ‘জামালপুরের বাসিন্দা পরিচয়ে আমাদের কোম্পানীর মালামাল খালাসের কাজ দিতাম আব্দুর রশিদকে। সেই সুবাদে আমার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। আমার কাছে ৭৬. ৮১ শতাংশ জমি বিক্রির কথা বলে স্ট্যাম্পে বায়নাপত্র করে এক কোটি টাকা নিয়েছে। জমিটি ডেভলপ করতেও আমার ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ডেভলপের পর জমির ডিমান্ড বেড়ে গেলে জমি সাব কবলা লিখে দিতে টালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে মির্জা আজম ও বরখাস্তকৃত এআইজি মাহমুদুর রহমান রিপনের দাপট দেখিয়ে হুমকী ধামকী দেখায়। এছাড়াও আমার নামে ১২টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছিলো।  আব্দুর রশিদের রোষানলে পড়ে আমি অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছি। তার হাত থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।’
অনুসন্ধানে জানা যায়- ঢাকা বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বন্দর থেকে মাল খালাসের সিএন্ডএফ এজেন্ট আব্দুর রশিদ চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্য। একটি কোম্পানির ভারতীয় এজেন্টের সাথে হাত মিলিয়ে মানিলন্ডারিং, ডলার পাচার, শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ঢাকা ও মাদারগঞ্জে মির্জা আজম ও এআইজি মাহবুবুর রহমান রিপনের পরিচয়ে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে ভুমিদস্যুতা, বিমান বন্দরে চোরচালান, মানিলন্ডারিংসহ নানা অপকর্ম করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এখনো তার সকল অপকর্ম চালু রেখেছেন সাবেক এআইজি রিপনের মাধ্যমে।

এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বেকায়দায় ফেলে প্রভাব দেখিয়ে নাম মাত্র মুল্যে কেনা ও খাসজমি দখল করে জাল জালিয়াতি করে বিক্রির অসংখ্য অভিযোগও রয়েছে। জামালপুর মেডিকেল কলেজের উল্টা পাশে বিশাল অংশ খাস জমি দখল করে প্লট বরাদ্দের নামে ভূমিদস্যূতা চলিয়ে যাচ্ছেন।

আব্দুর রশিদের ভুমিদস্যুতার দাপটে অসহায় হয়ে রয়েছে জমি ক্রেতা- বিক্রেতারা। অনেকেই হয়েছেন নি:স্ব। কেউ কেউ পথে বসার উপক্রম। তার রোষানলের মুখে অনেকের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ বিষয়ে আব্দুর রশিদ আত্বগোপনে থাকায় তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ও ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Back to top button