শিক্ষকদের কর্মবিরতি: পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করেছে দপ্তরী ও সাবেক ছাত্ররা
মহসিন রেজা রুমেল,দেওয়ানগঞ্জ: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৩ গ্রেড থেকে ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবিতে সারা দেশের অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতো দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করেছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও সাবেক ছাত্ররা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে- উপজেলায় ১৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে প্রায় ৭৭৫ জন শিক্ষক ও ৪২ হাজার ৪৩৪ শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনে ১ম শ্রেণী হতে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি আদায়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করতে হিমশিম খেতে হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের।
মঙ্গলবার সরজমিনে দেওয়ানগঞ্জ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাননপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা চেয়ার নিয়ে বিদ্যালয়ের আঙিনায় বা কেউ কক্ষে বসে আছেন। আর পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও সাবেক ছাত্ররা।
পাথরের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ সাদী বলেন-‘বিদ্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ী। শিক্ষকদের কর্মবিরতির বিষয়টি জেনেছি, বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয় সেটা ভেবে স্বপ্রনোদিত হয়ে পরীক্ষায় সাময়িকভাবে পরিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি।’
দেওয়ানগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী অরুণ কুমার দাস বলেন-‘পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করা আমার কাজ নয়। স্যারদের কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষায় যেন বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করছি।
তারাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন-‘বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা। যে কারণে বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও সাবেক ছাত্রদের সহযোগিতা নিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু ও সম্পন্ন করেছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা জানান-‘উপজেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির কথা জেনেছি। তবে আমি বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছি। বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষকগণ আমাকে অবহিত করেছেন।’




