জামালপুর পৌরসভার গাড়ি নিয়ে ঢাকাতে ডিডিএলজি
স্টাফ রিপোর্টার: জামালপুর পৌরসভার গাড়ি নিয়ে রাজধানী ঢাকাতে একটি প্রশিক্ষনে যোগ দিয়েছেন ডিডিএলজি মৌসুমী। এর আগে এই গাড়িটি নিয়ে কক্সবাজারে একটি প্রশিক্ষনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেছিলেন মৌসুমী খানম।
মৌসুমী খানম জামালপুর স্থানীয় সরকারের উপপরিচালকের পাশাপাশি জামালপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় গাড়িটি। রাত ১টার দিকে ঢাকায় পৌছানোর পর সরকারি রেস্ট হাউজে অবস্থান করেন মৌসুমী খানম। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওতে প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করেন তিনি। পরে আবার রাতে সরকারি সেই রেস্ট হাউজে অবস্থান করে শুক্রবার সকালে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মৌসুমী খানম।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়- এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে একটি প্রশিক্ষনের জন্য কক্সবাজারে যান মৌসুমি খানম। সেই প্রশিক্ষনেও জামালপুর পৌরসভার গাড়ি ব্যবহার করেছেন তিনি। তখন শিশু সন্তান ও তার মাকে তিনি সাথে নিয়ে যান। সেই সময় প্রশিক্ষনের জন্য কক্সবাজারে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেছিলেন তিনি।
তার এমন কর্মকান্ড সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রন) আইন-২০১৫ লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন-‘আমি চাইলেই আমার দপ্তরের গাড়ি জেলার বাইরে নিয়ে যেতে পারি না। এতে অনেক বিধি নিষেধ আছে। গাড়ি নিলেও জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করে নিতে হবে। যদি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ না জানে তবে এটি সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রন) আইন-২০১৫ লঙ্ঘন করে।’
সেই গাড়িটির চালক শান্ত মিয়ার সাথে শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান-‘আমরা এখন জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। এর আগে কক্সবাজার যাওয়া হয়েছিলো।’
গাড়ির বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন-‘ ডিডিএলজি স্যার ঢাকাতে একটি প্রশিক্ষনে গিয়েছেন। কিন্তু কোন গাড়িতে গিয়েছেন সেটি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’
তবে পৌরসভার নিচে সবসময় পৌর প্রশাসকের গাড়িটি দেখা গেলেও বৃহস্পতিবার সারাদিন সেই গাড়িটি দেখা যায়নি। আর জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে খবর নিয়ে জানা যায়- দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহৃত হয় না ডিডিএলজির গাড়ি।
এসব বিষয়ে স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ও জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম মোবাইল ফোনে বলেন-‘আমি আমার শিশু সন্তানদের জামালপুরে রেখে প্রশিক্ষনে এসেছি। যে প্রশিক্ষনটি হয়েছে সেটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রশিক্ষন। আমি এখানে ডিডিএলজি ও পৌর প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছি। আর ঢাকায় গাড়িটি আনার বিষয়ে বৈধতা রয়েছে। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে স্যারকে জানিয়ে এসেছি। তিনি অনুমতি দেয়ার পরই ঢাকায় এসেছি।’
তবে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইউসুপ আলী মোবাইল ফোনে বলেন-‘এই বিষেয়ে আমি তেমন কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে আমি আপনাকে বিষয়টি জানাবো।’
নিয়ম বহির্ভূতভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার ছাড়াও আরো বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে মৌসুমি খানমের বিরুদ্ধে। জামালপুর পৌরসভার সাবেক এক প্রশাসক দায়িত্ব পালন করার সময় নানা কারনে বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে বদলী করেন। এরপর মৌসুমী খানম জামালপুর পৌরসভায় আবারো প্রশাসক হিসেবে যোগদানের এক সপ্তাহের মধ্যে সেই সব কর্মচারীকে বদলী করে জামালপুর পৌরসভায় আনেন। এই ঘটনায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে জামালপুর পৌরসভার বাকি কর্মচারী ও শহরবাসীর মাঝে।




