কেমন করে অরিজিতে মন মজালেন এড শিরন?
‘আশিকি ২’-এই মজে গিয়েছিলেন এড শিরন। ‘তুমি হি হো’ শুনেই মন দিয়ে ফেলেছিলেন অরিজিৎ সিংহকে। তার পর বন্ধুত্ব। আর পরিণতি ‘স্যাফায়ার’-এ।
চলতি বছরের শুরুতেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল পশ্চিমবঙ্গের আপাত শান্ত এক শহরতলি, জিয়াগঞ্জ। ‘ঘরের ছেলে’ অরিজিতের সঙ্গে, তাঁরই স্কুটিতে সওয়ার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বিদেশি যুবক, কখনও উঠছেন নৌকায়, যেন বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে এসেছেন। তিনিই এড শিরন, ব্রিটিশ গায়ক ও গীতিকার।
গত কয়েক দিনে ফের একটা ঢেউ উঠেছে সমাজমধ্যমে, এডের নতুন গানের ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে দুই ভারতীয় আইকন শাহরুখ খান ও অরিজিৎ সিংহকে। দেখা যাচ্ছে জিয়াগঞ্জের দৃশ্য। ‘সাফায়ার’ মুক্তি পাওয়ার তিন দিনের মাথায় এড সমাজমাধ্যমে জানালেন, প্রথম শ্রবণেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন অরিজিতের। তারপর নিজেই লন্ডনের অনুষ্ঠানে দেখা করেন ভারতীয় গায়কের সঙ্গে। কথা হয় পরের গান নিয়ে। তার পরই তৈরি হয়েছে ইতিহাস।
এড এখনও মজে রয়েছেন মুর্শিদাবাদি গঙ্গার উপর দেখা সূর্যাস্তে। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, “অরিজিতের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ‘আশিকি ২’ দেখে। সেই প্রথম শুনলাম ‘তুম হি হো’। ছবির দৃশ্য, অরিজিতের কণ্ঠ আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল। খুঁজে বার করলাম অরিজিৎকে, কথা হল। সরাসরি বললাম, ‘তুমি চাইলেই আমরা একসঙ্গে গান করতে পারি।’” এর পর একদিন অরিজিতের লন্ডনের অনুষ্ঠানে গিয়ে হাজির এড শিরন। অতিথি হলেও মঞ্চে একসঙ্গে গাইলেন তিনি। ব্রিটিশ গায়কের কথায়, “অবিশ্বাস্য ছিল সেই অনুষ্ঠান।” সে দিনই ড্রেসিংরুমে অরিজৎকে ‘সাফায়ার’-এর প্রাথমিক অংশ়টি শোনান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রানুষঙ্গ এবং সুর নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন অরিজিৎ। এড লিখেছেন, “তার পর ইমেলে আমরা এ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলাম, যত দিন না আমি ভারতে পৌঁছোই।”
এডের স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে ভারত সফরের রোজনামচাও। এড চেয়েছিলেন নিজে এসে সবটা করতে। তিনি লিখেছেন, “অরিজিৎ বলল, আমার শহরে এসো, তোমাকে আমার বাড়ি, আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। আমরা একসঙ্গে কলকাতায় উড়ে গেলাম, তার পর সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে পৌঁছলাম অরিজিতের বাড়ি। গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করলাম— অদ্ভুত অভিজ্ঞতা— তার পর ওঁর স্কুটি চড়েই স্টুডিয়ো পৌঁছোলাম, গানটা শেষ করলাম।”
অরিজিতের থেকে পঞ্জাবি ভাষার সঠিক উচ্চারণ আর সেতারবাদন শিখে নিয়েছেন বলে দাবি এডের। এই সফরে গায়কের সঙ্গী ছিলেন তাঁর বাবাও। তিনি লিখেছেন, “রাতের খাওয়াদাওয়ার পর আমরা গোটা গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছি অরিজিতের স্কুটি চড়ে। আমার বাবার সঙ্গে দেখেছি সূর্যাস্ত আর রাতের চাঁদ। বাবার সঙ্গে এটা আমার সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে। সঙ্গে অরিজিৎ ছিল, সেটা বাড়তি পাওনা।”
অরিজিৎকে তাঁর দেখা সেরা প্রতিভাবানদের একজন বলে দাবি করেছেন এড শিরন। পাশাপাশি জানিয়েছেন, ‘সাফায়ার’-এর একটি পঞ্জাবি সংস্করণও প্রকাশ পাবে আগামী কয়েক সপ্তাহে। ইতিমধ্যেই ‘সাফায়ার’-এর অংশে গলা মেলাতে দেখা গিয়েছে শাহরুখ খানকেও। এড শিরন বাদশাহের উদ্দেশেও লিখেছেন ভালবাসার কথা। বলেছেন, ‘‘এই মানুষটিকে ভালবাসি।’’