সারাদেশ

সেই হিসাবরক্ষন কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত নেতা

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার ভুল কাগজে সই না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারপিটের অভিযোগ উঠে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। পরে  জামালপুর নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হয়। এনিয়ে উপজেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পরে সেই কর্মকর্তার কাছে হাতধরে ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন ।

গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে প্রকাশে হাতধরে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত নেতারা। পরে সেই কর্মকর্তার সাথে কুসল বিনিময় করেন তারা।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হায়দার আলী, সাবেক জামাতের আমির ও ২৮কুড়িগ্রাম ৪ আসনের জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী (নমীনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জামায়াতের কর্মী কাদের মোল্লাহ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরাসহ উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকটনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জানাযায়, গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স রৌমারী সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতুয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা উপজেলা একজন জামায়াতকর্মী। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টারদিকে তার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে যান।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হায়দার আলী, সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকসহ উপজেলা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের দশ বারোজন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে জামায়াতের রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করেন। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া আহত হন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া বলেন, জামাতের আমির এর সামনে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কলার ধরে ফেলা হয় এবং তাকে মারতে থাকে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারপিট করেন তারা।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতুয়ারা খাতুন অবসরের ইনক্রিমেন্টের বিলের জন্য চাপ দিচ্ছিল। তবে তার কিছু কাগজ ভুল থাকায় বিলে সাক্ষর করা হয়নি। আজ তারা (জামায়াতের নেতারা) আমাকে বিলে সাক্ষর নেওয়ার জন্য চাপ দিলে আমি অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় তারা আমাকে মারধর করে। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আমার অফিসে এসে উপস্থিত সবার সামনে আমার হাতধরে ক্ষমা চাইছেন জামায়াত নেতারা।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার এক জামাতের কর্মী কাদের মোল্লার স্ত্রীর কাগজপত্র নিয়ে কালক্ষেপন করছিলো পরে এক অনাকাংক্ষীত ঘটে। পরে তার অফিসে গিয়ে আমি তার হাতধরে ক্ষমা চেয়েছি এবং কর্মকর্তার সাথে কুশল বিনিময় করছি। সে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, ওই নার্সের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তার স্ত্রীকে বিল প্রদান না করে ওই কর্মকর্তা হয়রানি করছিলেন। এ জন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যায়। আলোচনার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে আমি উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।

কুড়িগ্রাম ৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী (নমীনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমাদের উপস্থিতি তে আমাদের জামায়াতের একজন হঠাৎ এক অনাকাঙ্খীত ঘটনা ঘটায়। পরে আমরা বিষয়টা মিমাংশা করে দিয়েছি। এবং এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।

 

Related Articles

Back to top button