মেলান্দহ

প্রেমের দ্বন্দ্বে জাবিপ্রবি ছাত্রীকে মারধর: আটক শিক্ষার্থী মুচলেকায় মুক্ত

সাকিব আল হাসান নাহিদ, মেলান্দহ: জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে প্রেমের সম্পর্কের দ্বন্দ্বের জেরে মারধর, মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া এবং ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে তানভীর রিয়াদ নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে মুচলেকায় ছেড়ে দিয়েছে মেলান্দহ থানা পুলিশ।

আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে মুচলেকা নিয়ে তানভীরকে থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে জামালপুর শহরের একটি মেসে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

অভিযুক্ত তানভির রিয়াদ জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়- প্রায় এক বছর আগে তানভীর রিয়াদ ও ওই ছাত্রী প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। সম্পর্ক চলাকালে তানভীর ভুক্তভোগীর ফেসবুক আইডি, ল্যাপটপ এবং ব্যক্তিগত ডিভাইসের পাসওয়ার্ডসহ সমস্ত তথ্য নিয়ন্ত্রণে নেন। সম্প্রতি তাদের সম্পর্ক ভেঙে গেলে তানভীর ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন।

অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার (১১ আগস্ট) হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ফেরার পথে তানভীর রিয়াদ ওই ছাত্রীকে রাস্তার মধ্যে আটকে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তার মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে নেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে মেলান্দহ থানায়ও অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

এদিকে অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত তানভীর ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের ফোনে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “জামালপুর থেকে আপনার মেয়ের লাশ যাবে।” এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তার শিক্ষককেও হুমকির বিষয়টি অবহিত করেন।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ চৌধুরী, হল প্রভোস্ট মো. ফরহাদ ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান সুজিত রায় থানায় গিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। আলোচনার ভিত্তিতে উভয়পক্ষ মুচলেকা দেন যে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে জানা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান- তানভীর তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ভেঙে ফেলেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাসওয়ার্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এ কারণে তিনি আর সেই ফোন ফেরত নিতে চান না এবং মামলার মতো আইনি ঝামেলায় এগোতে চান না।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বক্তব্য নিতে গেলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ চৌধুরী বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং বুধবার দুপুরে মিটিং ডাকা হয়। এরই মধ্যে জানতে পারি পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে আটক করেছে। পরে থানায় এসে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মুচলেকার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানরা থানায় এসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করেছেন। পরে আটক শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেওয়া হয়।”

Related Articles

Back to top button