জামালপুর

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে প্রবাসীর জমি দখলের অভিযোগ,থানায় জিডি

স্টাফ রিপোর্টার: জামালপুর শহরের দাপুনিয়া এলাকায় প্রবাসীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জামালপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

মঙ্গলবার জামালপুর থানায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে সাধারন ডায়েরীটি করেন ভুক্তভোগী তাসমিনা জামান (৪১)।

ভুক্তভোগী তাসমিনা জামান জামালপুর শহরের চামড়াগুদাম মোড় এলাকার মোঃ কামরুজ্জামানের স্ত্রী।

আর অভিযুক্তরা হলেন- জামালপুর পৌরসভার লাঙ্গলজোড়া এলাকার মৃত হামিদ শেখের ছেলে ও ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোমিনুর রহমান (৪৮), চন্দ্রা এলাকার মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে ও জামালপুর জেলা তাতী দলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, কুর্শা লাঙ্গলজোড়া গ্রামের হাবিল উদ্দিনের সন্তান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা তানজিনুল ইসলাম (২৯), দাপুনিয়া এলাকার মৃত জবেদ আলীর সন্তান মোঃ মনোয়ার হোসেন (৫০) ও একই গ্রামের মোঃ আঃ গণি’র সন্তান ও জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহন শ্রমিকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আবুল হাসেম (৩৭)।

সাধারন ডায়েরীতে তাসমিনা জাহান উল্লেখ করেন- ‘২ বছর আগে মোঃ সাইফুল আলমের কাছ থেকে ৮.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়। যার মৌজা-দাপুনিয়া, সিএস খং নং-১৪৯, আরওআর নং-১২৫, বিআরএস খং নং-১৩৩, খারিজ খং নং-৮৬১, পর্চার সিএস দাগ নং-২৯৭, আরওআর দাগ নং-৩৪৭, বিআরএস দাগ নং-৪৮৯ এবং শ্রেণী-কান্দা। অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন যাবত  জমিটি তাদের দাবি করে বেদখল করার পায়তারা করছিলো। চলতি বছরের ২৯ জুলাই বিকেলে অভিযুক্তরা জমিটি দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মান করতে থাকে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর নির্মানে বাধা দিলে আমাকে প্রানণাশ ও মিথ্যা মামলার  হুমকি দেন। পরে কয়েকজন আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। এখন আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

তাসমিনা জাহান বলেন-‘আমরা প্রবাসী। আমরা সবাই দেশের বাইরে থাকি। আমাদের কষ্টের টাকায় জমিটি কেনা। এতোদিন কেউ কিছু বললো না। হঠাৎ করে কয়েকজন ব্যক্তি সেই জমি দখল করে নিলো। এছাড়াও ওই জমিতে মোছাঃ রাবেয়া খাতুন নামে একজন মহিলা সাইনবোর্ড টানিয়েছে। তিনি পৈত্রিক সূত্রে সেই জমি নিজের দাবি করছে। আমি এর বিচার চাই।’

তাসমিনা জাহানের স্বামী মোঃ কামরুজ্জামান বলেন-‘আমরা র‌্যামিটেন্স যোদ্ধা। আমাদের কষ্টের টাকায় কেনা জমি বিএনপি নেতারা দখল করে নিয়েছে। তারা সবাই দলের প্রভাব খাটিয়ে এমন অন্যায় কাজ করছে। বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।’

মোঃ কামরুজ্জামন আরো বলেন-‘আমরা যখন জমিটি ক্রয় করি, সেই জমির দাবিদার আছে কিনা সেটি জানতে চেয়ে তখন পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিলো। আমরা সাড়ে ৮ শতাংশ জমি তিনবার মাপার পর কিনেছি। এরপর সেখানে খুটি দেয়া হয়েছে প্রকাশ্যে। তখন কেউ কোনো বাধা দেয়নি। কেউ জমি তাদের বলে দাবি করেনি। এখন কোন ক্ষমতায় তারা এই জমি দখল করছে সেটি সবাই বোঝে। এসবের মূল হোতা মোমিনুর রহমান। আমরা এর বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা মোমিনুর রহমান বলেন-‘ আমরা কয়েকজন মিলে সেই জমিটি ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া রাবেয়া খাতুনের কাছ থেকে বায়না করেছি। সেই জমিতে কোনো সাইনবোর্ড বা খুটি লাগানো ছিলো না। রাবেয়া খাতুন আমাদের জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। জমি বায়না করার কয়েক মাস পর কামরুজ্জামানের পরিবার এসে জমিটি তাদের দাবি করে। পরে আমরা বিষয়টি সুরাহার জন্য প্রথমে আদালতের আইনজীবী সমিতিতে, পরে জামালপুর থানায় বৈঠক করি। কিন্তু সেখানে কোনো সমাধান হয়নি। যদি কাগজের মূলে জমিটি তারা পায় তাহলে জমিটি আমরা ছেড়ে দিবো। আর যদি কাগজের মূলে তারা জমিটি না পায় তাহলে সেখানে আমরাই থাকবো। এখানে মারামারি-হানাহানির কোনো ঘটনা ঘটবে না। এখানে দলীয় কোনো প্রভাব নেই। আর এই বিষয়টি আমার দলের সর্বোচ্চ নেতারা জানে। আর তাদের নামে আমরাও একটি জিডি একজন এসআই-এর হাতে জমা দিয়েছি।’

এসব বিষয়ে জামালপুর শহর বিএনপির সাধারন সম্পাদক শাহ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন-‘এই বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি প্রথম জানতে পারলাম।’

জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুস সাকিব বলেন-‘আমরা একটি জিডি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

Related Articles

Back to top button