ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে ছাত্রদল নেতার বৃক্ষরোপণ
মোঃ মিরাজুল ইসলাম,জাবিপ্রবি: সম্প্রতি জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলের মসজিদের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে আগাছা নিধনের কীটনাশক প্রয়োগ ও ফুলগাছ রোপণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন জিকুর ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী, এটি শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে নেওয়া একটি কর্মসূচি ছিল। এতে অতিথি হিসেবে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আমির হামজা ও মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচির ছবিতে দেখা যায়, ছাত্রলীগের সমাজকর্ম বিভাগ কমিটির সদস্য মো. আসমাউল হাসান ও মো. মোবাশ্বির হাসান বৃক্ষরোপণ এবং কীটনাশক প্রয়োগে অংশ নিচ্ছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অনেকে ছাত্রদলে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সুকৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
কর্মসূচিরটির আয়োজক ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন জিকু বলেন, “তারা (আসমাউল ও মোবাশ্বির) ফ্রেশার থাকা অবস্থায় তাদের অজান্তেই ছাত্রলীগের কমিটিতে নাম দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন।”
তিনি আরও জানান, তাদের মধ্যে আসমাউল ৬ জুলাই ২০২৪ এবং মোবাশ্বির ১৬ জুলাই ২০২৪ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। পদত্যাগের প্রমাণ হিসেবে তিনি ফেসবুক পোস্টের দুটি স্ক্রিনশট দেন। তবে আসমাউল হোসেনের ফেসবুক আইডি যাচাই করে তার পদত্যাগের দাবি করা ৬ জুলাই ২০২৪ তারিখে এ ধরনের কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন- এই দুজন শুরুতেই ছাত্রদলের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু তখন তাদের কেন্দ্র তাদের দেয়নি। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশনা ছিল যে ছাত্রলীগের কেউ পদত্যাগ করে থাকে তাহলে তাদের যেন হল এবং ডিপার্টমেন্ট কমিটিতে দেওয়া হয়। আর সেদিনের কর্মসূচি কেন্দ্রীয় কোন কর্মসূচি ছিল না। হল কমিটিতে পদ প্রত্যাশীদের সম্মিলি ভাবেই এ কর্মসূচি করা হয়েছে।
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব যীনাত মিয়া আজিজুলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই কর্মসূচির বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে ছাত্রদলের কেন্দ্র থেকে পরিষ্কার নির্দেশনা আছে, কমিটিভুক্ত ছাত্রলীগের কাউকে যদি কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন-“গত ৫ আগস্টের পর যারা নেতৃত্বে এসেছি আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল এবং টিম লিডারদের নির্দেশনাও ছিল, ছাত্রলীগের কমিটিভুক্ত কাউকে যেন পদ না দেওয়া হয় এবং কমিটি ‘ক্লিন’ রাখা হয়। আপনি যে দুজনের কথা বললেন, তাদের মধ্যে আসমাউল নামের ব্যক্তিকে ‘স্বৈরাচারীর দোসর’ আখ্যায়িত করে এর আগে জাবিপ্রবির রংপুর বিভাগীয় ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি হতে দেওয়া হয়নি বলেও শুনেছি।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং ও প্রচার নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে। ওই আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও প্রতীক রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।




