মতিন রহমান, বকশীগঞ্জ: জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারে সুপরিচিত জমিদার মৃত দীলিপ চন্দের বাক প্রতিবন্ধী ছেলে রনি চন্দ। তিনি তার পৈত্রিক সম্পত্তি এবং স্ত্রীর চলে যাওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে এক হৃদয় বিদারক স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার আলটিমেটাম দিয়েছেন। রনি চন্দ তার দুই সন্তানসহ ২১ দিনের মধ্যে পৃথিবী ত্যাগের হুমকি দিয়েছেন, যদি তার দাবি পূরণ না হয়। জানা গেছে, রনি চন্দের বাবার এখনো অনেক সম্পত্তি রয়েছে।
রনি চন্দ তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন:
“আসসালামুআলাইকুম এবং নমস্কার। আমি রনি চন্দ।
আজ আমি আপনাদের সামনে আমার জীবনের এক কঠিন সত্য তুলে ধরতে এসেছি। আপনারা হয়তো জানেন, আমি কথা বলতে পারি না, কানেও শুনতে পাই না। আমার মনের সব কথা আমি ইশারা এবং লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করি।
আমার সহধর্মিনী ছবি, পারিবারিক অত্যাচার এবং আমার বড় বোন সোনালীর অবহেলায় আমাদের ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছেন সুখের আশায়। আমি বাক প্রতিবন্ধী হলেও, ছবিকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমাদের আইনগতভাবে এখনো বিচ্ছেদ হয়নি, আর আমি তাকে আবারও আমার জীবনে ফিরে পেতে চাই।
এছাড়াও আমার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। আমি আমার বাবার সম্পত্তি ফেরত চাই। আমার বাবা, বকশীগঞ্জ বাজারের নামকরা জমিদার মৃত দীলিপ চন্দের অনেক সম্পত্তি এখনো রয়েছে। কিন্তু সোনালী, শান্ত, বিশ্বজিৎ এবং সোনালী মার্কেট আমার প্রাপ্য টাকা আত্মসাৎ করছে, আমাকে সামান্যই দিচ্ছে।
আমি আগামী ২০ দিন অপেক্ষা করব। এই সময়ের মধ্যে আমি দেখতে চাই, আমার পাওনা সম্পত্তি এবং টাকা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় কিনা এবং আমার স্ত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার হয় কিনা।
যদি এই ২০ দিনের মধ্যে কোনো সমাধান না হয়, তাহলে ২১তম দিনে আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। আমার এই চরম সিদ্ধান্তের জন্য সোনালী, বিশ্বজিৎ এবং শান্তই দায়ী থাকবে। আমার এই আকুতি সকলের কাছে পৌঁছে যাক।”
স্থানীয়রা জানান- রনি চন্দ দীর্ঘ দিন ধরে তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা অবহেলিত হয়ে আসছেন। তার স্ত্রীর চলে যাওয়া এবং পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে চলমান বিরোধ তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এই ঘটনা বকশীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং অনেকেই রনি চন্দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং মানবাধিকার কর্মীদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী, যাতে এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যায়।