বকশীগঞ্জে পালিত হলো ঐতিহাসিক ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস
মতিন রহমান,বকশীগঞ্জ: মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ১১ নম্বর সেক্টরের ধানুয়া কামালপুর পাক-হানাদার মুক্ত দিবসে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জামালপুরের বকশীগঞ্জে পালিত হয়েছে। দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনা ও স্মৃতিচারণ করেন। তাঁরা ৪ ডিসেম্বরকে ১১ নম্বর সেক্টরের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে দিবসটি উদযাপনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বকশীগঞ্জ উপজেলা কমান্ড। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ধানুয়া কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশেদ আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনে এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিরাজুল হক।
বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুবাইদুল ইসলাম শামীম-এর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আজিজুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোর্শেদা খাতুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আসমা-উল-হুসনা, বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডের আহ্বায়ক মোঃ হাবিবুর রহমান।
বক্তারা বলেন, ভারতীয় সীমান্তবর্তী জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুরে যুদ্ধের শুরুতেই হানাদার বাহিনী গড়ে তোলে শক্তিশালী ঘাঁটি। কামালপুর বিজয়ের লক্ষ্যে একাত্তুরের ১১ নভেম্বর হানাদারদের শক্তিশালী ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে হানাদাররা। ২৩ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হানাদার বাহিনীর ১৬২ সৈন্যের একটি দল যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। শত্রুমুক্ত হয় ধানুয়া কামালপুর।
কামালপুর অভিযানে শহীদ হয়েছেন ১৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। অন্যদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসারসহ নিহত হয় ২২০ জন সেনা।
বীর উত্তম থেকে বীর প্রতীক মিলিয়ে সর্বমোট ২৯ জন মুক্তিযোদ্ধা সাহসীকতা পদক পেয়েছেন কেবল মাত্র কামালপুর যুদ্ধের জন্য।




