আপু ডাকায় উত্তেজিত হয়ে রোগীর অভিভাবক বের করে দিলেন চিকিৎসক
রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর: শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার মারজিয়া খাতুনকে এক রোগীর অভিভাবক আপু ডাকায় উত্তেজিত হয়ে ওই রোগীর অভিভাবকসহ রোগীকে তার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারী রোগীর অভিভাবক শহরের নয়নী বাজার মহল্লার কাজী মাসুম জানান- দুপুর দুইটার দিকে তার ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক অনন্যা তাকে জরুরি কিছু ওষুধ লিখে দেন। ওষুধগুলো হাসপাতালে না পেয়ে হাসপাতালে বাইরে বিভিন্ন দোকানে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে একটি ওষুধ না পেয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবারও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন আগের ডাক্তার অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে যাওয়ায় পরবর্তী ডিউটিতে আসেন মারজিয়া খাতুন।
এসময় রোগীর অভিভাবক বিনয়ের সঙ্গে চিকিৎসক মারজিয়াকে আপু ডেকে বলেন, ‘আগের চিকিৎসক যে ওষুধ দিয়েছিল সে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য কোন ওষুধ দেওয়া যায় কিনা।’
এসময় মারজিয়া ‘আপু’ শব্দটি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলেন, ‘আপু বলছেন কেন, আমি মেডিকেল অফিসার। যান, বের হয়ে যান।’
ওই রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘আপু ডেকে কি দোষ করেছি।’ কিন্তু এতেও আরও রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা তাকে ধমক দিয়ে তার রুম থেকে বের করে দেন।
ঘটনা জানার পর বিকাল তিনটার দিকে শেরপুরের কয়েকজন সংবাদকর্মী চিকিৎসকের কক্ষে আসেন বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্য।
এসময় তিনি বলেন, “আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারো সঙ্গে কোনো কথা বলবো না।”
পরে এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তাহেরাতুল আশরাফির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি, হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ বা সরাসরি কথা বললে শনিবার আসতে হবে।”
হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ডাক্তারদের এমন আচরণে উপস্থিত অনেক রোগী এবং তার অভিভাবকরা একই অভিযোগে তুলেন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
তারা বলেন, “শুধুই এই মারজিয়াই নয় হাসপাতালে কর্তব্যরত যত ডাক্তার আছে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই রোগী এবং তার অভিভাবকদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন।”